Popular Posts

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সম্পর্কে আপনার অবশ্যই যা জানতে হবে

 মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কী? মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করা যাবে কী?, ওষুধের মেয়াদোত্তীর্ণ হলে কি হয়? মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খাওয়া যাবে কি?

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি



ওষুধ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ এবং নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে প্রতিটি ওষুধের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে এবং এই মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে ওষুধের কার্যকারিতা ও গুণাগুণ পরিবর্তিত হতে পারে। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কী?

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ হলো সেই ওষুধ, যার গায়ে উল্লেখিত মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সাধারণত ওষুধের মোড়কের উপর Manufacturing Date (উৎপাদনের তারিখ) এবং Expiry Date (মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ) উল্লেখ করা থাকে। Expiry Date পার হলে ওষুধটি আর ব্যবহারের উপযোগী থাকে না।

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকিসমূহ:

কার্যকারিতা হ্রাস: মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধে থাকা সক্রিয় উপাদানসমূহ সময়ের সাথে ধীরে ধীরে কার্যকারিতা হারাতে শুরু করে। ফলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে ব্যর্থ হয়।


বিষাক্ততা সৃষ্টি: কিছু ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হলে রাসায়নিক পরিবর্তনের মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থে পরিণত হতে পারে। যেমন- টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হলে কিডনি ক্ষতির কারণ হতে পারে।


সংক্রমণের ঝুঁকি: চোখের ড্রপ, ইনজেকশন বা তরল ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ হলে তাতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে, যা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ায়।


প্রতিক্রিয়া ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ গ্রহণের ফলে অপ্রত্যাশিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যা রোগীর স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক।

 মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কিভাবে চিহ্নিত করতে হবে জানতে ক্লিক করুন ওষুধের মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখ কিভাবে দেখতে হয়


মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ নিয়ে WHO ও FDA-র মতামত


WHO (World Health Organization): WHO-এর মতে, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং ওষুধের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে পারে। WHO নির্দেশনা দিয়েছে যে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের সঠিক নিষ্পত্তি করা আবশ্যক, যাতে তা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি না করে।


FDA (U.S. Food and Drug Administration):  FDA-এর মতে, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহার করা ঝুঁকিপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাসায়নিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে বিষাক্ত পদার্থে পরিণত হতে পারে। এছাড়া, অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ কার্যকারিতা হারিয়ে সংক্রমণ এবং অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।


মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবস্থাপনা

  • মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়।
  • ফার্মেসি থেকে ওষুধ কেনার সময় মেয়াদের তারিখ দেখে নিতে হবে।
  • মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ আলাদা স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে তা ব্যবহারের সম্ভাবনা না থাকে।
  • ওষুধ ফেলে দেওয়ার সময় পরিবেশবান্ধব নিয়ম মেনে ফেলে দিতে হবে।

Drug Enforcement Administration (DEA)  অনুযায়ী, পুরোনো ওষুধ সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা হলে তা শিশু বা পোষা প্রাণীর হাতে গিয়ে বিপদজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।


উপসংহার

মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের ঝুঁকি এড়াতে সঠিক সময়ে ওষুধের মেয়াদ যাচাই করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ যথাযথভাবে নিষ্পত্তি করা জরুরি। WHO এবং FDA-এর নির্দেশিকা অনুযায়ী, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ কখনোই ব্যবহার করা উচিত নয়। সুস্বাস্থ্যের জন্য সঠিক ও নিরাপদ ওষুধ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সকলের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

No comments:

Post a Comment

We value your insights! Feel free to share your thoughts, ask questions, or provide feedback. Please keep comments relevant and respectful. Spam or promotional content will be removed.